Description
প্রত্যেক সাম্রাজ্য তার চারপাশে একটা মিথ তৈরি করে। গড়ে তোলে একধরনের মিস্টিক। অপরাধের বৈধতা, বিরোধীদের দমন আর সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এটা প্রয়োজন। প্রাচীন মিসরের ফিরাউনরা নিজেদের ঈশ্বর দাবি করত। নতুন ফিরাউনের মুকুট গ্রহণের আগে রীতিমতো অনুষ্ঠান করে উদ্যাপন করা হতো মানুষের ওপর দেবত্বারোপ। মধ্যেযুগের ইউরোপিয়ান রাজা-বাদশাহরা বলত ঐশ্বরিক অধিকারবলে শাসনের কথা। জাপানের সম্রাটদের মনে করা হতো দেববংশজাত।নাগাসাকির হামলার পর সম্রাটের কণ্ঠ প্রথমবারের মতো রেডিওতে শুনতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল অনেক জাপানি।
অন্য সব সাম্রাজ্যের মতো অ্যামেরিকাও এ কাজটা করেছে। কিন্তু অ্যামেরিকান সাম্রাজ্যের অনন্যতা হলো, তারা এ কাজটা করেছে এক অভূতপূর্ব মাত্রায়। হলিউড, ম্যাস মিডিয়া, অ্যাকাডেমিয়া এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সুশীলসমাজ নামের উচ্ছিষ্টভোগীদের কাজে লাগিয়ে এই মিথ-মেইকিংকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে অ্যামেরিকা। রুপালি পর্দার জাদু, অ্যামেরিকান বাড়িগাড়ি আর নারীর প্রেম ব্রেইনওয়াশ করেছে প্রায় পুরো পৃথিবীকে। মিডিয়ার মায়াজালে আচ্ছন্ন মানুষ যেন ভুগছে বিচিত্র কোনো সামষ্টিক স্টকহোম সিন্ড্রোমে। নিজেকে অ্যামেরিকা উপস্থাপন করেছে সভ্যতার অনিচ্ছুক ত্রাণকর্তা হিসেবে। দায়িত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে অনিচ্ছাসত্ত্বেও মানবতা আর শান্তির খাতিরে যাকে বারবার হাতে তুলে নিতে হয় অস্ত্র।
প্রায় পৌরাণিক ক্ষমতার অধিকারী এ ত্রাণকর্তা কখনো র্যাম্বো, কখনো নানা রঙের পোশাক পরা সুপারহিরো আর কখনো অ্যামেরিকান স্নাইপারের চেহারায় উপস্থিত হয় হলিউডের পর্দায়। পৌরাণিক দেবতাদের মতো এ দেবতাও একেকবার জন্ম নেয় একেক রূপে।
Reviews
There are no reviews yet.